ফলের মৌসুমে বাজারে এখন আম ও কাঁঠালের জোড়া রাজত্ব। জনপ্রিয় এই দুই দেশি ফল একইসঙ্গে থালায় উঠছে, মজাও হচ্ছে দ্বিগুণ। কিন্তু অনেকের মুখে শোনা যায়, ‘আম-কাঁঠাল একসঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়’— এতে নাকি গ্যাস্ট্রিক, এমনকি জ্বরও হয়!
প্রশ্ন হলো—এই কথার পেছনে আদৌ কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি না?
চলুন, বিষয়টি খতিয়ে দেখি বিজ্ঞান ও পুষ্টিবিদদের দৃষ্টিকোণ থেকে।
আম ও কাঁঠালের পুষ্টিগুণ আম: ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ সমৃদ্ধ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রাকৃতিক চিনি আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কাঁঠাল: উচ্চ ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, আয়রন ও পটাশিয়াম রয়েছে এতে। দুই ফলই আলাদা আলাদা ভাবে শরীরের জন্য উপকারী—তাহলে একসঙ্গে খেলেই বা সমস্যা কোথায়?
একসঙ্গে খাওয়া কি ক্ষতিকর?
পুষ্টিবিদদের মতে, একসঙ্গে খাওয়ার কোনও সরাসরি ক্ষতি নেই। তবে কিছু শর্ত মানা জরুরি:অতিরিক্ত খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে
আঁশ ও প্রাকৃতিক চিনি বেশি থাকায় বেশি খেলে পেট ফুলে যাওয়া বা অম্বল হতে পারে। ডায়াবেটিস থাকলে সতর্ক থাকুন গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ থাকার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। দুই ফলই ‘গরম প্রকৃতির’একসঙ্গে বেশি খেলে শরীরে উত্তাপ বাড়তে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি পান জরুরি।
তাহলে ভুল ধারণাটা এলো কোথা থেকে?
বাঙালির লোককথা বা পারিবারিক সাবধানবাণীতে অনেক সময় অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে হওয়া সমস্যা-কেই একসঙ্গে খাওয়ার জন্য দায়ী করা হয়। আসলে মূল সমস্যা ‘কী খাচ্ছেন’ নয়, ‘কতটুকু খাচ্ছেন’—তা নিয়েই।
সতর্কতার জন্য করণীয়
পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ রাখুন, ঠান্ডা কাঁঠাল বা অতিপাকা আম না খান, একসঙ্গে খেলেও খাবারের মাঝে অন্তত ৩০ মিনিট বিরতি নিন
শিশু, ডায়াবেটিক ও হজমে দুর্বলদের ক্ষেত্রে বিশেষ খেয়াল রাখুন।
সচেতন ভাবে খেলে চিন্তার কারণ নেই
আম-কাঁঠাল একসঙ্গে খাওয়া মানেই সমস্যা—এটা নিছকই একটি ভুল ধারণা। সঠিক পরিমাণে, সচেতনভাবে খেলে এই দুই ফলই হতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ফল খান, পরিমিত খান, সুস্থ থাকুন!
খুলনা গেজেট/এসএস